বিদেশে কম খরচে পড়াশোনা: IELTS দিয়ে স্কলারশিপ পাওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইড

ভূমিকা: অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিদেশে পড়াশোনা করার। কিন্তু টিউশন ফি, থাকার খরচ ও অন্যান্য ব্যয় দেখে অনেকেই সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন না। আসলে সঠিক পরিকল্পনা ও তথ্য থাকলে IELTS দিয়ে স্কলারশিপ নিয়ে খুব কম খরচে বিদেশে পড়াশোনা করা সম্ভব। আজ আমরা সহজ ভাষায় জেনে নেব কিভাবে এই সুযোগগুলো পাওয়া যায়। 

 ১. কেন IELTS বিদেশে পড়াশোনার জন্য জরুরি?

IELTS (International English Language Testing System) একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরীক্ষা, যা একজন ব্যক্তির ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাই করে। বিশ্বের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীর ইংরেজি যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে এই পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণ করে।

  • ভর্তি শর্ত: অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির অন্যতম প্রধান শর্ত হলো নির্দিষ্ট IELTS স্কোর অর্জন করা।

  • স্কলারশিপ সুবিধা: উচ্চ IELTS স্কোর শিক্ষার্থীর স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়।

  • ভিসা প্রক্রিয়া: স্টুডেন্ট ভিসা বা ইমিগ্রেশন আবেদনেও এই পরীক্ষার ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


 ২. কোন দেশগুলো কম খরচে পড়াশোনার সুযোগ দেয়?

বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে খরচ দেশভেদে ভিন্ন হয়। নিচে কয়েকটি দেশ উল্লেখ করা হলো যেখানে কম খরচে পড়াশোনার সুযোগ আছে: দেশ গড় টিউশন ফি (প্রতি বছর) সুবিধা জার্মানি প্রায় ফ্রি (শুধু সেমিস্টার ফি) সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো টিউশন ফি নেই নরওয়ে প্রায় ফ্রি ইংরেজি মিডিয়াম প্রোগ্রাম পাওয়া যায় তুরস্ক $1,000 – $4,000 স্কলারশিপ প্রোগ্রাম বেশি মালয়েশিয়া $1,500 – $4,000 জীবনযাত্রার খরচ কম হাঙ্গেরি $1,500 – $3,000 স্টুডেন্ট ভিসা সহজে পাওয়া যায়

 ৩. স্কলারশিপের ধরন মেরিট-বেসড স্কলারশিপ – 

স্কলারশিপের ধরন

  1. মেরিট-ভিত্তিক স্কলারশিপ – চমৎকার একাডেমিক ফলাফল এবং উচ্চ IELTS স্কোরের জন্য প্রদান করা হয়।

  2. নিড-ভিত্তিক স্কলারশিপ – শিক্ষার্থীর আর্থিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়।

  3. সরকারি স্কলারশিপ – যেমন Erasmus MundusTürkiye BurslariDAAD প্রোগ্রামগুলো।

  4. বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ – প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বৃত্তি ব্যবস্থা থাকে।


IELTS স্কোর এবং স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা

  • সাধারণ প্রোগ্রাম: IELTS ব্যান্ড স্কোর 6.0 – 6.5 থাকলেই ভর্তি এবং কিছু স্কলারশিপের সুযোগ পাওয়া যায়।

  • প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রাম: ব্যান্ড স্কোর 7.0 বা তার বেশি হলে বড় ধরনের স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

  • মনে রাখবেন, স্কোর যত বেশি হবে, সুযোগ তত বেশি হবে।


 ৫. আবেদন করার ধাপ (Step-by-Step) 

দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করুন ওয়েবসাইট থেকে প্রোগ্রাম ও স্কলারশিপ তথ্য জেনে নিন IELTS প্রস্তুতি নিয়ে প্রয়োজনীয় স্কোর অর্জন করুন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন জমা দিন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (পাসপোর্ট, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, IELTS সনদ) জমা করুন স্কলারশিপ অনুমোদন পেলে ভিসা প্রসেস করুন 

 ৬. খরচ কমানোর জন্য টিপস 

স্কলারশিপ লিস্ট আগে দেখে নিন – কিছু স্কলারশিপ পুরো টিউশন কভার করে পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ আছে এমন দেশ বেছে নিন সেমিস্টার ফি কম এমন বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিন এয়ার টিকিট ও ভিসা খরচ কমাতে আগে থেকে বুকিং করুন 

 ৭. জনপ্রিয় স্কলারশিপ ওয়েবসাইট

scholarships.com daad.de (জার্মান স্কলারশিপ) 

 studyinnorway.no 

 turkiyeburslari.gov.tr

scholarshipportal.com

উপসংহার: বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে সঠিক তথ্য, পরিকল্পনা এবং পরিশ্রম—এই তিনটি বিষয় জরুরি। ভালো IELTS স্কোরের মাধ্যমে স্কলারশিপ পাওয়া সম্ভব এবং সেই সাথে জীবনযাত্রার খরচ কম এমন দেশ বেছে নিলে পড়াশোনা অনেক সাশ্রয়ী হয়ে যাবে।

 প্রশ্ন: 👉 আপনি কোন দেশে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখেন? কমেন্টে জানিয়ে দিন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গোইসমেল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন; প্রতিটি মতামত যাচাই হয়

comment url